মসজিদের আদব

পঞ্চম শ্রেণি (প্রাথমিক) - ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা - ইবাদত | | NCTB BOOK
16
16

মসজিদ অর্থ সিজদাহ্ করার স্থান। সালাত আদায়ের জন্য নির্ধারিত ইবাদতখানাকে মসজিদ বলে। মসজিদে মুসলমানগণ প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত সালাত জামানাতের সাথে আদায় করেন। মসজিদে কেবলমাত্র আল্লাহর ইবাদত এবং ইবাদতের সাথে সংশ্লিষ্ট কাজ করা হয়। এ জন্যই মসজিদকে বায়তুল্লাহ বা আল্লাহর ঘর বলা হয়। নিজেদের বাড়িতে বা অন্য কোনো পবিত্র স্থানেও সালাত আদায় করা যায়। তবে মসজিদে জামাআতের সাথে সালাত আদায় করলে অনেক বেশি সওয়াৰ হয়।

দুনিয়ার মধ্যে আল্লাহ তায়ালার কাছে সবচেয়ে প্রিয় স্থান হলো মসজিদ। যারা পাঁচ ওয়াক সালাত মসজিদে জামাআতের সাথে আদায় করে, আল্লাহ তাদের খুব ভালোবাসেন।

পৃথিবীতে অসংখ্য মসজিদ আছে। বাংলাদেশে দুই লাখেরও বেশি মসজিদ আছে। ঢাকা শহরকে বলা হয় মসজিদের শহর। দুনিয়ার সকল মসজিদই আল্লাহর ঘর। সকল মসজিদই পবিত্র ও সম্মানিত। তবে তিনটি মসজিদের মর্যাদা বেশি। এগুলো হলো মসজিদে হারাম বা কাবা শরিফ। কাবা শরিফ মক্কায় অবস্থিত। মসজিদে নববি বা মদিনার মসজিদ এবং মসজিদে আকসা বা বায়তুল মুকাদ্দাস। মসজিদে আকসা জেরুজালেমে অবস্থিত। 

আমরা জানি মসজিদ হলো আল্লাহর ঘর। দুনিয়ার সবচেয়ে পবিত্র ও সম্মানিত স্থান। আল্লাহ তায়ালা আমাদের খালিক, মালিক। তিনি আমাদের জীবন-মৃত্যুরও মালিক। পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায়ের মাধ্যমে আল্লাহর সাথে বান্দার সাক্ষাৎ ঘটে। বান্দা তার মাবুদের দরবারে হাজিরা দেয়। আল্লাহর দরবারে অতি বিনয় ও বিনম্রভাবে হাজির হতে হবে। অত্যন্ত কাতরভাবে অন্তরের আকুতি জানাতে হবে। সুতরাং মসজিদের কতগুলো আদব মেনে চলতে হয়। যেমন :

১. পাক-পবিত্র শরীর ও পোশাক নিয়ে মসজিদে প্রবেশ করতে হয়।

২. পবিত্র মন ও বিনয়-বিনম্রতার সাথে মসজিদে প্রবেশ করা।

৩. মসজিদে প্রবেশের সময় এ দোয়া পড়া- 

বাংলা উচ্চারণ : আল্লাহুম্মাফ তাহলী আবওয়াবা রাহমাতিকা।

অর্থ : হে আল্লাহ, আমার জন্য তোমার রহমতের দরজাগুলো খুলে দাও।

8. মসজিদে প্রবেশের সময় হুড়োহুড়ি, ধাক্কা-ধাক্কি না করা। মসজিদে কোনো খালি জায়গা দেখে বসা। নিজে না গিয়ে অন্যকে সামনে যেতে বলা উচিত নয়। বেশি জায়গা জুড়ে না বসে, অন্যদের বসার জায়গা করে দেওয়া।

৫. লোকজনকে ডিঙিয়ে সামনের দিকে না যাওয়া। 

৬. মসজিদে কোনো অপ্রয়োজনীয় কথা না বলা । 

৭. নীরবতা পালন করা। উচ্চস্বরে কথা না বলা । 

৮. কুরআন তিলাওয়াত ও ধর্মীয় কথাবার্তা শোনা। 

৯. কোনো অবস্থাতেই হৈ চৈ, শোরগোল না করা।

১০. সালাতরত কোনো মুসল্লির সামনে দিয়ে যাতায়াত না করা। 

১১. মোবাইল খোলা রেখে বা অন্য কোনোভাবে মসজিদের শৃঙ্খলা ভঙ্গ না করা 

১২. মসজিদে বিনয় ও একাগ্রতার সাথে ইবাদত করা। 

১৩. মসজিদ থেকে বের হওয়ার সময় এ দোয়া পড়া-

আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা মিন ফাদলিকা।

অর্থ : হে আল্লাহ আমি তোমার অনুগ্রহ কামনা করছি।

মসজিদ প্রধানত সালাত আদায়ের জন্য তৈরি হলেও একে কেন্দ্র করে ইসলামি শিক্ষা দীক্ষা পরিচালনা করা যায়। সুন্দর সমাজ ও শিক্ষা-সংস্কৃতি সৃষ্টিতে মসজিদ পুরুত্বপূর্ণ- ভূমিকা রাখতে পারে। মক্তবেও গণশিক্ষা পরিচালিত হতে পারে।

পরিকল্পিত কাজ : শিক্ষার্থীরা মসজিদের আদবগুলোর একটি তালিকা খাতায় তৈরি করবে।

Content added By
Promotion